নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার সকল ছিদ্র বন্ধ করলেও তার পতনের ছিদ্র বন্ধ করতে পারে না। তারা দেশের মধ্যে আয়নাঘর সৃষ্টি করে, মানুষকে গুম করে মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়। তারা দেশে দেশে বেগমপাড়া তৈরি করে, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে। পতিত ফ্যাসিস্টরা ক্ষমতায় থাকতে মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করত না। মানুষের সাথে পশুর মতো আচরণ করে আজ তারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। দুঃখের বিষয়, যাওয়ার আগে তারা তাদের নেতাকর্মীদের কিছু না বলে শুধু নিজের জান নিয়ে পালিয়ে গেছে। এথেকে সকলের শিক্ষা নেয়া উচিত।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আয়োজনে কুলাউড়া জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ওয়ার্ড দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী সরকারের সমালোচনা করে শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ কাউকে শান্তিতে বসবাস করতে দেয়নি। তারা জুলুমের সীমা অতিক্রম করেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা এই জালিমের বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলাম। তারা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছিলেন। তার (শেখ হাসিনা) পিতা বলেছিলেন- সবাই পেল সোনার খনি, আমরা পেলাম চোরের খনি। তিনি আরও বলেছিলেন- পাকিস্তানিরা সব কিছু নিয়ে গেল, এই চোরদের নিল না কেন?
শফিকুর রহমান বলেন, আমরা জনকল্যাণমূলক বাংলাদেশ চাই। এখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। মানুষ শান্তিতে দুবেলা খেতে পারবে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশ থেকে দুর্নীতি উৎখাত করবে। দুর্নীতিবাজদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। আমরা গরু চোরকে ঘৃণা করি। কিন্তু যারা কলমের খোচায় রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করে, পাচার করে তাদের বেলায় আমরা নীরব ভূমিকা পালন করি। তা মোটেও কাম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা পেশা ও ধর্ম দেখে মানুষকে মূল্যায়ন করবো না। শত নির্যাতন সত্বেও আমাদের কর্মীদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
যুবকদের উদ্দেশে জামায়াতের আমীর বলেন, আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত কল্যাণকর কাজ হয়েছে তা যুবকদের হাত ধরে হয়েছে। আমাদের বিশ্রামের কোনো সময় নেই। দেশের প্রতিটি ঘর-বাড়িকে ইসলামী আন্দোলনের ঘাঁটি করতে হবে। আল্লাহ যদি কবুল করেন তাহলে আমাদের বিশ্রাম হবে জান্নাতুল ফেরদাউসে। যুবকেরা এগিয়ে আসলে আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিময় দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।
জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী ইয়ামীর আলীর পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, মৌলভীবাজার-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম ও সিলেট মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুর রব প্রমুখ।
এর আগে কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে চা শ্রমিকদের নিয়ে অনষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আমীরে জামায়াত বলেন, মানবিক করিডর নো, বন্দর নো, দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে আমরা কোনো কিছুতে হ্যাঁ বলবো না, দেশের স্বার্থ যেখানে বিঘ্নিত হবে সেখানে নো।
করিডরের বিষয়ে তিনি বলেন, যদি এটা করতে হয় তাহলে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে পার্লামেন্টে বসে করতে হবে। আর এখন করিডরের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বসে আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের বিষয়ে বলেছেন- এমন একটি নির্বাচন হবে, যেটা ইতিহাস সৃষ্টি করবে। মানুষ হাসি মুখে ভোট দেবে। কেউ বলবে না তার ভোট আরেকজন দিয়ে দিয়েছে।
মুক্তির প্রত্যাশা মিডিয়া ,কপিরাইট © মুক্তির প্রত্যাশা - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Leave a Reply