অনলাইন ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান এবং ফিল্ড মার্শাল জেনারেল অসিম মুনির স্পষ্ট বার্তায় জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তান কখনো ভারতের “দাদাগিরি” সহ্য করবে না।
শুক্রবার (৩০ মে), ‘হিলাল টকস’ নামে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনায় শিক্ষাবিদ ও সিনিয়র শিক্ষক প্রতিনিধিদের সামনে এসব মন্তব্য করেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণসংযোগ বিভাগ আইএসপিআর এই বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
অসিম মুনির বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা কখনো একতরফা আধিপত্য মেনে নেব না। শান্তির ইচ্ছা থাকলেও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো আপসের সুযোগ নেই।” তিনি আরও বলেন, পানির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পাকিস্তানের অবস্থান দৃঢ় এবং এটি দেশের জন্য একটি ‘রেড লাইন’।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ইঙ্গিত এবং পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকির বিষয়ে মুনির বলেন, “পানি ২৪ কোটির বেশি পাকিস্তানির মৌলিক অধিকার। কেউ এটিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।”
কাশ্মীর ইস্যুতে তিনি জানান, এটি কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। পাকিস্তান কাশ্মীরের পাশে আছে এবং কখনোই পিছু হটবে না।
জেনারেল মুনির আরও দাবি করেন, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় উভয় পক্ষ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ান-উম-মারসুস’ পরিচালনার মাধ্যমে ভারতের সামরিক ঘাঁটি ও যুদ্ধবিমান লক্ষ্য করে প্রতিক্রিয়া জানায়। তার ভাষায়, “এই প্রতিরোধ ছিল সত্যের পক্ষে এক বিজয়,” এবং এতে পাকিস্তান ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান (তিনটি রাফালসহ) ধ্বংস করে।
তিনি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয় এবং দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান বৈষম্য ও সহিংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদ ভারতের অভ্যন্তরীণ সৃষ্ট সমস্যা। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলিমদের উপর দমন-পীড়ন এই উত্তেজনার মূল উৎস।”
বেলুচিস্তান অঞ্চলে অস্থিরতা নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, সেখানে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সাধারণ বেলুচদের কোনো সম্পর্ক নেই, বরং এগুলো বিদেশি মদদপুষ্ট।
আলোচনার শেষে তিনি শিক্ষকদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “এই জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে শিক্ষকদের দায়িত্ব অপরিসীম। আমাদের আত্মত্যাগের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষাবিদরাও সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের আস্থা প্রকাশ করেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
মুক্তির প্রত্যাশা মিডিয়া ,কপিরাইট © মুক্তির প্রত্যাশা - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Leave a Reply