নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, “কোনো রাজনৈতিক দল গোছাতে না পারলে তার জন্য জাতীয় নির্বাচন পেছানো যাবে না।” তিনি বলেন, “জনগণ চায় একটি নির্বাচিত ও স্থায়ী সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। সেই নির্বাচন আয়োজনে যতটুকু সংস্কার দরকার, তা আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ করা গেলে ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়া কোনো সমস্যার বিষয় নয়।”
শনিবার বিকেলে বগুড়া সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, “তারেক রহমান দেশের সকল বাম ও ডান রাজনৈতিক শক্তিকে নিয়ে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। তারুণ্যের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিনিই আগামী দিনে রাজনীতির নেতৃত্ব দিবেন। তাই তরুণদের এগিয়ে এসে গণতন্ত্র ও জনগণের সরকারের পক্ষে লড়াই করতে হবে।”
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, “অধ্যাপক ইউনূস একজন ভালো মানুষ হলেও, তার ঘনিষ্ঠ মহলের পরামর্শে রাষ্ট্র পরিচালিত হতে পারে না। সরকারের ভুলত্রুটি নিয়ে কথা বলাই রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত এবং করিডোর ইস্যুতে বিএনপি সোচ্চার থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার শুধু টাকা পাচারের সুযোগ তৈরি করেছে, তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেনি। বিএনপি তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে।”
সমাবেশের প্রধান বক্তা যুবদল কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, “এই সরকার জনগণের সরকার নয়। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। অবিলম্বে নির্বাচন দিয়ে একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।”
স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী বলেন, “তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা হলো জনগণের মুক্তির সনদ। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়েই গড়ে তোলা হবে দূর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিমুক্ত বাংলাদেশ।”
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “আমরা অনেক সহ্য করেছি, কিন্তু এখন আর বিমাতাসুলভ আচরণ সহ্য করবো না। সরকারকে সবসময় সহযোগিতা করলেও তারা আমাদের সম্মান দেয়নি। ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যার বিচার না হলে ছাত্রসমাজ রাজপথে ফিরে আসবে।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু হাসান মো. ইয়াহিয়া, নিহত যুবদল নেতা ইমরান হোসেনের কন্যা সামিয়া ইসলাম মীম প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন রাজিব আহসান ও নাসির উদ্দিন নাসির।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু ও মাহাদী আমিন, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত, রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ফরহাদ হোসেন আজাদ, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, ওবায়দুর রহমান চন্দন, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ভিপি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
বৃষ্টির মধ্যেও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার হাজার হাজার তরুণ এই সমাবেশে মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
মুক্তির প্রত্যাশা মিডিয়া ,কপিরাইট © মুক্তির প্রত্যাশা - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Leave a Reply