অবহেলায় ধ্বংসের পথে মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন খেরুয়া মসজিদ
নাকিবুল হাসান
১৫৮২ সালে নির্মিত বগুড়ার শেরপুরের খেরুয়া মসজিদ আজ চরম অবহেলায় পড়ে আছে । সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে অচিরেই হারিয়ে যাবে মুঘল ইতিহাসের মূল্যবান একটি অংশ ।
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকার টোলা গ্রামে অবস্থিত খেরুয়া মসজিদটি প্রায় ৪৫০ বছর আগে মুঘল আমলে নির্মিত হয়। মসজিদের সামনের দেওয়ালে স্থাপিত ফারসি শিলালিপি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মির্জা নবাব মুরাদ খাঁনের পৃষ্ঠপোষকতায় আব্দুস সামাদ ফকির ৯৮৯ হিজরির ২৬ জিলকদ ইংরেজি ১৫৮২ সালে মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্বুজ, চার কোণায় চারটি মিনার এবং পশ্চিম দেওয়ালে তিনটি খোদাইকৃত মিহরাব। পুরো স্থাপনাজুড়ে ইট, চুন, সুরকি ও সূক্ষ্ম কারুকার্যময় দেয়াল ও গম্বুজে মুঘল স্থাপত্যের নিখুঁত ছাপ স্পষ্ট।
তবে এখন মসজিদের গায়ে ফাটল, ছাদের ওপর আগাছা, দেয়ালে স্যাঁতসেঁতে, এমনকি বৃষ্টির দিনে চুঁইয়ে পড়ে পানি। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় মসজিদের অনেক অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলি বলেন, ’এমন স্থাপনা আমাদের ইতিহাস। কিন্ত সংরক্ষণ এর অভাবে এর সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকে মসজিদটি দেখতে এলেও নেই পর্যটন সুবিধা। প্রশাসনের উচিত এদিকে নজর দেওয়া।
স্থানীয়দের দাবি, মসজিদটিকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা গেলে তা এলাকাবাসীর আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণের বড় সুযোগ হবে।
১৫৮২ সালে নির্মিত এই মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে থাকলেও দীর্ঘদিন কোনো কার্যকর সংস্কার হয়নি।
মুক্তির প্রত্যাশা মিডিয়া ,কপিরাইট © মুক্তির প্রত্যাশা - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Leave a Reply