লক্ষ্মীপুরে শত্রুতার জেরে হামলায় জামায়াত নেতা ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম কাউছার আহমদ মিলনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
ইমামের মৃত্যুকে স্বাভাবিক দাবি করে বিএনপির ভাষ্য, এ নিয়ে রাজনীতি কাম্য নয়। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করলে তারা চুপ থাকবে না।
আর জামায়াতের অভিযোগ, ওই ইমামকে হাসপাতলে চিকিৎসাও নিতে দেওয়া হয়নি। হত্যাকারীদের ধরতে হবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।
ইমামের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার (৮ জুন) সন্ধ্যায় নিহতের স্ত্রী শিল্পি আক্তার বাদি হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় নামে-বেনামে ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় নাম রয়েছে ১২ জনের, অজ্ঞাত ২০।
নিহতের নাম কাউছার আহমদ। রাজিবপুর এলাকার মমিন উল্যার ছেলে কাউছার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের ওলামা বিভাগের এক নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি এবং স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন- রিয়াজ, রনি, কামাল, সোহাগ, জহির, রকি, বাবুল, সোহেগ হেবেছা, সাহেদ, সুমন, স্বপন আহমেদসহ অজ্ঞাত ২০ জন। তারা আদিলপুর ও রাজিবপুর এলাকার বাসিন্দা এবং বিএনপি নেতা-কর্মী বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার (৯ জুন) সকালে শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলায় সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা বিএনপি।
এতে দলের আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, পৌর বিএনপির সভাপতি মাহাবুবুর রহমান লিটন ও যুবদলের জেলা সভাপতি রেজাউল করিম লিটন উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, কাউছার আহমদের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে হয়েছে। কিন্তু জামায়াত নেতাকর্মীরা এটিকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড প্রমাণের চেষ্টা করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করলে বিএনপি চুপ থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, অতীতে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সুসম্পর্ক ছিল। কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা কাম্য নয়।
অন্যদিকে, একই দিন দুপুর ১২টার দিকে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নেতৃত্ব দেন জামায়াতের জেলা সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী।
এতে অংশ নেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, শহর জামায়াত আমির আবুল ফরহা নিশানসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা।
বিক্ষোভে ড. রেজাউল করিম বলেন, হাসপাতালে আহত কাউছারকে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিরোধের জেরে গত পাঁচ জুন দুপুরে রাজিবপুর এলাকায় বাদির বাড়ির সামনে কাউছারের ভাই আফতাব হোসেন আরজুর ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় আসামিরা। কাউছার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তার মাথার পেছনে লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয় এবং পরে তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মোন্নাফ বলেন, নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।