গাজার পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে, এবং এতে মানবিক সংকট তীব্রতর হচ্ছে। ১৮ মে, ২০২৫ তারিখে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ১৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৭০ জন গাজার উত্তরাঞ্চল ও গাজার শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে নিহত হন। এই আক্রমণটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক নিন্দার সৃষ্টি করেছে এবং এটি আবারও প্রমাণিত করেছে যে, গাজায় চলমান সহিংসতা কতটা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
এছাড়াও, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসন থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং আহতের সংখ্যা ১,২০,০০০ ছাড়িয়েছে। এই পরিসংখ্যানই নির্দেশ করছে যে, যুদ্ধের প্রভাব শুধু সামরিক বাহিনীর ওপরই পড়ছে না, বরং অসংখ্য নিরপরাধ মানুষও এই সহিংসতার শিকার হচ্ছেন।
ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা পরেও ইসরাইল আবারও গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করেছে। ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপের পর ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও, মাত্র দুই মাস পরই আবারো বৃহত্তর আক্রমণ চালানো শুরু হয়। ১৮ মার্চ, ২০২৫ থেকে শুরু হওয়া নতুন অভিযানে প্রায় ২,৯৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮,১৭৩ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়াও, ২ মার্চ, ২০২৫ থেকে গাজার মানবিক সহায়তা প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, সেখানে একটি গুরুতর মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, এই সংকটের কারণে তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ওষুধের অভাবে ভুগছে।
এমন পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (ICC) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এই সব ঘটনা মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে আছে।
এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে কি এই সংঘাতের সমাধান সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।