নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট হবে ‘শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের বাজেট’। এতে অপ্রয়োজনীয় জনতুষ্টিমূলক ব্যয়ের পরিবর্তে বাস্তবভিত্তিক ও দায়িত্বশীল ব্যয়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনইসি’র চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এনইসি সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর বাইরে স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশনসমূহের জন্য ৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার এডিপিও অনুমোদিত হয়েছে।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “আমরা দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প খুব একটা নিচ্ছি না। তবে মাতারবাড়ির মতো একটি-দুটি চলমান দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প থাকছে। আবার উচ্চসুদের স্বল্পমেয়াদি ঋণও এই বাজেটে নেয়া হচ্ছে না।” তিনি আরও জানান, উন্নয়ন সহযোগীদের আগের পাওনাগুলো মেটানোর দিকেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা আরও বলেন, “আসন্ন বাজেটে মূল লক্ষ্য থাকবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, রাজস্ব শৃঙ্খলা এবং বাজেট ঘাটতি হ্রাস। আমরা বাস্তবমুখী বাজেট তৈরির চেষ্টা করছি। গত বছরের সঙ্গে এবারের তুলনা করা ঠিক হবে না।”
তিনি জানান, এবারের প্রস্তাবিত এডিপি সংশোধিত উন্নয়ন বাজেটের তুলনায় আকারে বড়। যদিও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়লেও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম। তবে স্বাস্থ্য খাতে পরিচালন ব্যয় বেশি থাকায় প্রায় পুরো বরাদ্দই সেই খাতে চলে যাবে। শিক্ষকদের অবসরভাতা ও অন্যান্য ভাতা পরিশোধেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
বাজেট প্রণয়নে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা, বৈদেশিক অর্থায়ন ও সম্পদের প্রাপ্যতা বিবেচনা করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং মানব সম্পদ উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোকে এবারের এডিপিতে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।