আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের পেটালিং জায়ায় পরিচালিত এক সাঁড়াশি অভিযানে বাংলাদেশিসহ ৫৯৭ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২২ মে) দিনগত রাতে পরিচালিত এই অভিযানে অংশ নেয় ইমিগ্রেশন বিভাগের এনফোর্সমেন্ট টিম।
শুক্রবার (২৩ মে) সকালে এক বিবৃতিতে ইমিগ্রেশনের উপ-মহাপরিচালক (অপারেশনস) দাতুক জাফরি এমবক তাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মেগা অভিযানে বিভিন্ন সংস্থার মোট ৩৯০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। অভিযানের সময় ১,৫৯৭ জন অভিবাসীর কাগজপত্র যাচাই করা হয়, যার মধ্যে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ৫৯৭ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের বয়স ১১ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ৪৭২ জন পুরুষ এবং ১২৫ জন নারী রয়েছেন।
আটকরা ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তবে আটককৃতদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
জাফরি জানান, পরিচয়পত্র না থাকা, অনুমোদিত সময়ের বেশি অবস্থান, পাসের শর্ত লঙ্ঘন এবং ভুয়া নথি ব্যবহারের দায়ে তাদের আটক করা হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তাদের ইমিগ্রেশন ডিটেনশন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে।
অভিযান চলাকালে পেটালিং জায়া সিটি কাউন্সিলের এনফোর্সমেন্ট বিভাগও অংশগ্রহণ করে। তারা স্থানীয় বসতিগুলোর আশপাশে অবৈধ ব্যবসা এবং বিদেশিদের অবৈধ কর্মসংস্থানের বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করে।
পেটালিং জায়ার মেয়র মোহাম্মদ জহরি সামিংগন জানান, তার দল স্থানীয় সরকারের নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব বিধির মধ্যে রয়েছে—অননুমোদিত বাণিজ্যিক স্থানে বিদেশি নিয়োগ, আবাসস্থলকে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার এবং ডরমিটরির উদ্দেশ্যে বাসাগুলোতে অবৈধ সংস্কার।
উপ-মহাপরিচালক জাফরি মালয়েশিয়ান নাগরিকদের সতর্ক করে বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় বা নিয়োগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩, পাসপোর্ট আইন ১৯৬৬, ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ১৯৬৩ এবং মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালান বিরোধী আইন ২০০৭-এর আওতায় এমন অপরাধ গুরুতর হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি বা বাড়িওয়ালা অবৈধ অভিবাসীদের থাকার সুযোগ দেন বা তাদের আশ্রয় দেন, তাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অভিবাসীদের প্রতি দেশটির সরকারের এই ধরনের বারবার সতর্কতা ও অভিযান প্রমাণ করে যে, বৈধতা ছাড়া অবস্থান করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মুক্তির প্রত্যাশা মিডিয়া ,কপিরাইট © মুক্তির প্রত্যাশা - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Leave a Reply